শনিবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৫

কেমন ছিলেন সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ?


সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ শুক্রবার সকালে মারা গেছেন। সৌদি আরবের সরকারি বার্তা সংস্থার বরাতে খবরটি নিশ্চিত হয়। কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

উল্লেখ্য গত ৩১ ডিসেম্বর ফুসফুস সংক্রমণের কারণে রিয়াদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
অনেকটা বৃদ্ধ বয়সে সিংহাসনে বসেও একজন সতর্ক সংস্কারক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। যখন আরব বসন্তে আরবের বড় বড় ক্ষমতাধর শাসকদের তখত সড়ে যায় সেখানে বহাল তবিয়তেই সৌদি রাজ তার ক্ষমতা ধরে রাখেন।
সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুতে অঞ্চলটিতে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যেই আইসিস ও ইরান সৌদির উপর বিশাল হুমকি হিসেবে দাড়িয়ে আছে। সেখানে বাদশাহ আবদুল্লাহর অনুপস্থিতি অনেক মিস করা হবে।
এদিকে সৌদি রাজ পরিবার খুব দ্রুত ক্ষমতার পালা পরিবর্তন করে ফেলে। আবদুল্লাহর ভাই ক্রাউন প্রিন্স সালমান ঘোষণা করেন বাদশাহ আবদুল্লাহ মারা গেছেন এবং তিনি বর্তমানে সৌদি বাদশাহ।


১৯৯৬ সাল থেকেই দেশ পরিচালনা করে আসছেন আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ। তার সৎ ভাই বাদশাহ ফাহাদ একটি মারাত্মক স্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর থেকে মূলত আবদুল্লাহই রাজকার্য পরিচালনা করে আসছিলেন। ২০০৫ সালে ফাহাদের মৃত্যুর পর নিজেকে বাদশাহ বলে ঘোষণা দেন আবদুল্লাহ। তারপর থেকে বেশ দক্ষতার সাথেই নিজের ক্ষমতা সুসংহত করে আসছিলেন আবদুল্লাহ। তার এই শাসনকালে অনেক ক্ষমতাধর শাসকের শেষ পরিণতি দেখতে পেলেও তিনি তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছিলেন।

তার শাসকালে যে দুটি জায়গা থেকে হুমকি পেয়েছিলেন সেগুলো হলো সালাফিপন্থি ওহাবি ও আধুনিকপন্থী সৌদি নাগরিকরা। বাদশাহ নিজে মডারেট হলেও তিনি তেমন কোন সংশোধন নিয়ে আসেননি। বরং তার শাসনকালে কয়েকটি বড় ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।
বাদশাহ আবদুল্লাহ কে ছিলেন, কেমন ছিলেন?

আবদুল্লাহর শৈশব:
বাদশাহ আবদুল্লাহর শৈশব নিয়ে কমই জানা যায়। তিনি ১৯২৪ সালে রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আবদুল আজিজ বিন আবদুল রাহমান আল সৌদ (ইবন সৌদ) এর পঞ্চম সন্তান আবদুল্লাহ। আবদুল্লাহর মা ফাহদা বিনত্ আসি আল শোরাইম ইবন সৌদের অষ্টম স্ত্রী। আবদুল্লাহর ভাই বোনের সংখ্যা ছিল ৫০ থেকে ৬০ জনের মত।
আবদুল্লাহর জন্মের সময় তার বাবা আমির আবদুল আজিজ তখন মাত্র আরবের উত্তর ও পূর্বাঞ্চল দখলে এনেছিলেন। ১৯২৮ সালে মক্কার শাসক শরীফ হোসেইনকে পরাজিত করেন আমির আজিজ। ১৯৪০ এর আগ পর্যন্তও সৌদি রাজ পরিবার অনেক গরীব ছিল। তার পর থেকে তেল বিক্রি করে সৌদি রাজের অর্থ প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করে।

শিক্ষাজীবন:
বাদশাহ আবদুল্লাহর শিক্ষা জীবন নিয়ে বেশি জানা যায়না। সৌদি আরবের আনুষ্ঠানিক তথ্য বিভাগ থেকে জানা যায় তিনি ‘ধর্মীয় শিক্ষায় আনুষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ’ করেন। আবদুল্লাহ ব্যক্তিগতভাবে ব্যাপক পড়াশুনার মাধ্যমে নিজেকে শিক্ষিত করে তুলেন। ঐতিহ্যগত আরব শিক্ষা লাভ করার জন্য বেদুইনদের সাথে আরব মরুভূমিতে দীর্ঘদিন বসবাস করেন।

প্রাথমিক ক্যারিয়ার: 
১৯৬২ সালের আগস্ট মাসে আবদুল্লাহকে সৌদি আরবের ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এ বাহিনীর আওতার মধ্যে আছে সৌদি রাজ পরিবারের নিরাপত্তা, অভ্যুত্থান ঠেকানো ও দুটি পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনার হেফাজত করা। এ বাহিনীর অধীনে আছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার সেনা এবং ২৫ হাজার উপজাতীয় মিলিশিয়া।

রাজনীতিতে আগমন:

বাদশাহ ফয়সালের হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সালের মার্চে তার সৎ ভাই খালিদ সিংহাসনে আরোহন করেন। বাদশাহ খালিদ প্রিন্স আবদুল্লাহকে দ্বিতীয় ডেপুটি প্রধান মন্ত্রী নিযুক্ত করেন।
১৯৮২ সালে বাদশাহ খালিদের মৃত্যুর পর বাদশাহ ফয়সাল সিংহাসনে বসেন এবং প্রিন্স আবদুল্লাহর আরেক দফা পদোন্নতি ঘটে। এবার তিনি ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি রাজ মন্ত্রীসভার সভায় সভাপতিত্ব করা শুরু করেন। তারপর বাদশাহ ফাহাদ তাকে ক্রাউন প্রিন্স এবং তার পরে বাদশাহ হবেন বলে ঘোষণা করেন।

ভারপ্রাপ্ত শাসক হিসেবে ভূমিকা
১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে টানা কয়েকটি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বাদশাহ ফাহাদ অনেকটা শাসনকার্য পরিচালনার অনুপযুক্ত হয়ে পড়েন। তার এই অসুস্থতাকালীন ৯ বছর শাসনকার্য পরিচালনার ভার পড়ে আবদুল্লাহর উপরে।
২০০৫ এর ১ আগস্টে বাদশাহ ফাহাদের মৃত্যুর পর আবদুল্লাহ সত্যিকারের ক্ষমতার অধিকারী হন।

বাদশাহ হিসেবে আবদুল্লাহর ভূমিকা:
আবদুল্লাহ যখন ক্ষমতায় আরোহন করেন তখন সৌদি আরব ছিল মৌলবাদী ইসলামিস্ট ও আধুনিকপন্থি সংস্কারপন্থী এ দুই বিশাল ভাগে বিভক্ত। সৌদি আরবে মার্কিন সেনার উপস্থিতি নিয়ে তাদের ভিন্নমতকে জানান দেয়ার জন্য গোড়াপন্থীরা অনেক সময় বোমা হামলা ও কিডন্যাপের মত ভয়ানক ঘটনা ঘটাতো।
এদিকে আধুনিকপন্থীরা তাদের ব্লগ ও আন্তর্জাতিক প্রেসার গ্রুপের মাধ্যমে নারীদের বাড়তি অধিকার ও শরীয়া আইনের সংস্কার, ধর্মীয় ও প্রেসের স্বাধীনতার পক্ষে আওয়াজ তুলেন।
আবদুল্লাহ কঠিনহস্তে ইসলামিস্টদের দমন করেন কিন্তু তার কাছে যেসব সংস্কারের দাবি তোলা হয়েছিল তার সবগুলো বাস্তবায়ন করেননি।

পররাষ্ট্রনীতি
বাদশাহ আবদুল্লাহ তার পুরো রাজনৈতিক ক্যারিয়ারেই একজন শক্ত আরব ন্যাশনালিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন কিন্তু তারপরও তিনি অনেকগুলো দেশ ভ্রমণ করেন এবিং বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করেন। তিনি প্রথম থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় ‘গেমপ্লেয়ার’ হিসেবে নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখেন।

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন
৯০ বছর বয়সী বাদশাহ আবদুল্লাহ ৩০ জনেরও বেশি নারীর স্বামী ছিলেন এবং কমপক্ষে ৩৫ জন সন্তানের বাবা।
বাদশাহর সবচেয়ে ছোট ছেলে বদর যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন বাদশাহর বয়স ছিল প্রায় ৭০ এর কোঠায়। কিছুদিন আগে তার কনিষ্ঠা কন্যা সাহাবের বিয়ে হয় বাহরাইনের রাজা হামাদের ছেলের সাথে। সাহাবের জন্ম হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। ততদিনে বাদশাহ আবদুল্লাহর বয়স ৭০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
কিভাবে বাদশাহ আবদুল্লাহ এমন উৎপাদনক্ষম ছিলেন? এই রসালাপে রসদ দিয়েছে উইকিলিকসের একটি তথ্য। রিয়াদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রে একটি ক্যাবল পাঠায় যেখানে উল্লেখ করা হয় বাদশাহ আবদুল্লাহ তখনো “একজন পাড় ধূমপায়ী, নিয়মিত হরমোন ইনজেকশন গ্রহণ করেন এবং অতিরিক্ত ভায়াগ্রা সেবন করেন”।

সৌদি দূতাবাসের সরকারী জীবনীতে বাদশাহ আবদুল্লাহ ঘোড়াকে খুব পছন্দ করতেন বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি পৃথিবী বিখ্যাত অ্যারাবিয়ান হর্স লালন পালনের জন্য ‘রিয়াদ ইকোয়েস্ট্রিয়ান ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পড়তে খুব পছন্দ করেন। রিয়াদ, ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা ও মরক্কোতে  তিনি অনেকগুলো লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন।
বাদশাহ আবদুল্লাহর ব্যক্তিগত সম্পদের মূল্যমান প্রায় ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বখ্যাত ফোবর্সের মতে তিনি ছিলেন বিশ্বের ৫ম ধনী রাজ পরিবারের সদস্য।
তার স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ও মানবাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে অস্বীকৃতির জন্য তাকে এশিয়ার শীর্ষ পাঁচ ‘জঘন্য স্বৈরশাসক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল।


সূত্র: ফরেন পলিসি, ফোবর্স, এশিয়ান হিস্ট্রি

স্ত্রী হত্যার অভিযোগে শশী থারুরকে যে ছয়টি প্রশ্ন করেছে পুলিশ



স্ত্রী সুনন্দা পুসকারকে হত্যার অভিযোগের খরগ অনেক আগে থেকেই ঝুলছে ভারতের কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতা শশী থারুরের বিরুদ্ধে। দিল্লীর লীলা হোটেলে সুনন্দা পুসকারের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ সময় তার গায়ে ১৫টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। সুনন্দার মৃত্যুর পেছনে তার স্বামী শশী থারুরের হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পাকিস্তানী সাংবাদিক মেহের তারারের সাথে গোপন প্রণয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল বলে জানা যায়। সম্প্রতি ভারতের রাজনীতিবিদ ও খ্যাতিমান লেখক শশী থারুরকে এ ছয়টি প্রশ্ন করেছে দিল্লীর পুলিশ:
প্রশ্ন এক: কেন তার কক্ষে অ্যালপ্রাক্স পিল পাওয়া যায় যেটা ডাক্তারের ব্যবস্থায় ছিলনা?
প্রশ্ন দুই: তার শরীরে ১৫ টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়? আপনি কি তাকে আঘাত করেছিলেন?

প্রশ্ন তিন: তাকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়ার পর কেন হাসপাতালে নেওয়া হয়নি? কেন সাথে সাথে পুলিশ ডাকা হয়নি?
প্রশ্ন চার: কেন এআইআইএমএস পরিচালককে সুনন্দার মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ নিয়ে মেইল পাঠানো হলো?

প্রশ্ন পাঁচ: কেন আপনি এই খবর ছড়ালেন তার ‘লুপু’ হয়েছিল যেখানে আসলে তিনি সেটাতে আক্রান্ত হননি?

প্রশ্ন ছয়: আপনি মেহের তারারকে(পাকিস্তানী সাংবাদিক) কিভাবে চেনেন? আপনারা কি দুবাইয়ে একসাথে ছিলেন?

শশী থারুর কি জবাব দিয়েছেন তা নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা চলছে।

সূত্র: টাইমস্ অব ইনডিয়া

কফি খান, চামড়ার ক্যান্সার ঠেকান

নতুন একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যারা নিয়মিত কফি পান করেন তাদের চামড়ার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। দুরারোগ্য মেলানোমা চামড়ার ক্যান্সার আমেরিকায় অনেক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়ায়।
গবেষণায় দেখা যায় যেসব ব্যক্তি দিনে ৪ কাপ অথবা তার চেয়ে বেশি কাপ কফি খান তাদের মেলানোমায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যারা খান না তাদের চেয়ে ২০% কমে যায়।

গত ২০ জানুয়ারি জার্নাল অব দ্য ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এ গবেষণাটি প্রকাশ করে।
গবেষণায় এ সতর্কতাও দেয়া হয়। কফি খেয়ে নিয়মিত সূর্যের আলোতে সানস্ক্রিন না লাগিয়ে গেলে তেমন কাজ হবে না। চামড়ার ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় কারণ সূর্যের অতি বেগুণী রশ্মি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এর তথ্যমতে ২০১৪ সালে ৭৬,১০০ জন চামড়ার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৯,৭১০ জন এর মধ্যেই মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে প্রাণঘাতী রোগের তালিকায় চামড়ার ক্যান্সার প্রথম সাড়িতে রয়েছে।

সূত্র: ইয়াহু হেলথ্