রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

এলান হেনিংয়ের স্ত্রী বলছি...



ঘটনাটা গেল শনিবারের। এক ভিডিও বার্তা দেখে আতকে উঠলেন বারবারা হেনিং। ভিডিও বার্তায় এলান হেনিংকে হত্যার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)! পুরো ভিডিও দেখতে পারলেন না বারবার-মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠলেন। ৪৭ বছর বয়সী এলান হেনিং যে তার স্বামী।
এরপর নাওয়া-খাওয়া প্রায় ভুলেই গেলেন বারবারা। রাত-দিন ছোটাছুটি শুরু করলেন ব্রিটেনের মুসলিম আলেম, নেতা থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সব জায়গায়। একটাই আকুতি, তার স্বামীর জীবনটা যেন রক্ষা পায়। শেষমেশ আইএসকে লক্ষ্য করে একটা চিঠিও লিখলেন বারবারা। মর্মস্পর্শী সেই চিঠি পড়লে যে কারও হৃদয় গলে, কিন্তু আইএস তাতে কর্ণপাত করবে কি না কে জানে!
বারবারা লিখেছেন, ‘আমি বারবারা হেনিং। এলান হেনিংয়ের স্ত্রী। গত ডিসেম্বরে এলানকে বন্দি করা হয় এবং তারপর থেকে ইসলামিক স্টেটের হাতে সে বন্দি।
এলান খুব শান্তিপ্রিয় এবং পরোপকারী। যুক্তরাজ্যে সে তার পরিবার ও ট্যাক্সি ড্রাইভারের চাকুরী ছেড়ে সিরিয়াতে চলে আসে। তার উদ্দেশ্য ছিল সিরিয়ার গাড়িবহরে গাড়ি চলানো। কিন্তু এখানে সবচেয়ে করুণ অবস্থায় থাকা মানুষদেরকে দেখে তার পরপোকারী মন কেঁদে ওঠে। সে সাহায্য করার জন্য তার মুসলিম বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে কাজে নেমে পড়ে।
তাকে যখন আটক করা হয় তখন সে একটা অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছিল। অ্যাম্বুলেন্সে করে দুর্দশাগ্রস্ত সিরিয়ানদের জন্য খাবার ও পানি বহন করা হচ্ছিল। সিরিয়ায় থাকার পেছনে এর চেয়ে বড় বা ছোট কোনও উদ্দেশ্য ছিলনা এলানের। সে শুধু সমব্যথী হয়েই সেখানে সাহায্য করতে গিয়েছিল।
আমি আইএস এবং যারা এলানকে আটক করে রেখেছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। আমি তাদের কাছে কয়েকটি বার্তা পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা এর কোনও জবাবই দেয়নি। আমি অনুরোধ করছি যারা এলানকে আটক করে রেখেছে তারা যেন খুব তাড়াতাড়ি আমার বার্তার জবাব দেয়।
আমার বার্তাগুলো যদি তাদের হাতে পৌছায় তাহলে আমি তাদের কাছে অনুরোধ করবো তারা যেন আমার স্বামী এলান হেনিংয়ের বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখে।’

সূত্র: বিবিসি
তরজমা: সাবিদিন ইব্রাহিম

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন