ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন বড় বড় গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। প্রখর রৌদ্রে একটু আশ্রয় নেয়ার জন্য সেসব গাছ খুবই দরকারী। কিছু কিছু মানুষও গাছের মত। তাদের ছায়ায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া যায়। বিশ্রাম নিয়ে আবার জীবনের পাগলা ঘোড়ায় চড়ে গন্তব্যে হাঁটার তাড়া পাওয়া যায়। একসময় নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাসায় খুব সহজেই ছাত্ররা চলে যেতে পারতো, বাসায় থাবার দাবার সহ মানসিক ক্ষুধাও মেটানোর যথেষ্ঠ সুযোগ দিতো শিক্ষকরা। এখন শিক্ষকরা বিভিন্ন ভাড়া খাটাতে ব্যস্ত, ছাত্র-ছাত্রীরাও ইঁদুর দৌড়ে আছে। কেউ কাউকে সময় দিতে বা সময় নিতে পারছে না। এখনো অনেক সেরা শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন সংখ্যাটা কম হলেও।
আমিও অল্প কয়েকজন শিক্ষকের সহবত পাইনি যে এ কথা বলতে পারবো না। তবে আমি বেশিরভাগ জিনিস পেয়েছি রাস্তায়, ফুটপাথে, পথের মানুষদের কাছ থেকে। দেয়াল বিশিষ্ট চারকোণা ক্লাসরুম থেকে এই ছাদহীন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, এই উন্মুক্ত বিশ্ব থেকে অনেক শিখেছি, জীবনের গভীর অর্থের সন্ধান খানিকটা হলেও পাবো বলে মনে করছি।পুরোটা পেতে হলেও এই খোলা প্রান্তরের ক্লাসে শিক্ষা নিতে হবে বলেই মনে করি।
এই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা প্রশিক্ষক, বিশেষজ্ঞ, প্রফেসর তাদের একজন হচ্ছেন বংশীবাদক গফুর ভাই। যখনই ক্লান্ত হয়ে যেতাম জীবন দৌড়ে, বিভিন্ন পাপ, তাপ ও চাপ যখন কাঁধের জোয়াল হিসেবে দেখা দিতো তখনই নিজেকে হালকা করার জন্য ডাকসুতে গফুর ভাইয়ের বাঁশির সুরে হারিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। ওনাকে তখন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালাই মনে হতো।
উনি আমার ব্যবসায়িক পার্টনারও ছিলেন কয়েকদিন! হ্যা, কবিতার খাতা নামে একটি বিশ পৃষ্ঠার একটা সাহিত্য পত্রিকা বের করেছিলাম। এটা ৫/৬ সংখ্যা বের হয়ে স্থগিত প্রায় আছে। তবে আমরা মাস দুয়েকের মধ্যেই পরবর্তী সংখ্যা নিয়ে আসছি। এখন দেখছি আমি একজন কবিকে মিস করছি আবার আমার ব্যবসায়িক পার্টনারকেও।
অবশ্য ব্যবসায় আমার কোনোদিন লাভ হয়নি বা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবসায় আমি সফল হতে পারিনি। অবশ্য সবসময় সফলতার জন্য কাজ করতে নেই। সফলতার চেয়ে ব্যর্থতা অনেক বড় শিক্ষক!
প্রত্যেকবার ‘কবিতার খাতা’ বের করে গফুর ভাইয়ের কাছে ২০/৩০ কপি রেখে দিতাম। প্রত্যেকবার তাকে শর্ত জুড়ে দিতাম ৫০% আমার আর বাকি ৫০% তার। কিন্তু একবারও এক পার্সেন্টও ফেরত পেতাম না। আমি জানতাম তিনি ফেরত দেবেন না বা দিতে পারবেন না কিন্তু কৃত্রিম প্রকাশকের অভিনয় করতাম আর কি! কবিতা যে বিক্রি করা যায় না সেটা তো আমার জানা। তবে গফুর বিভিন্ন ফর্মূলা করে আমাদের সব কপি বিক্রি করে দিতো সেটাই অনেক ছিলো আমাদের জন্য, টাকাটা নয়।
চারুকলা আর ডাকসুর সামনের অত্যন্ত পরিচিত মুখটির অনুপস্থিতি নজরে পড়ছে। এই সাধারণ বৃক্ষতলায় একটু শান্তির বাতাস খুঁজে পাচ্ছিনা। গফুর ভাইদের মতো চরিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত জরুরী।
গফুর ভাইয়ের একটি প্রেমকাহিনী আছে সেটা কতটুকু সত্য সেটা জরুরী নয় কিন্তু এর গল্প ভ্যালু কম নয়। কোন একসময় যখন গফুর ভাই আরো তরুণ ছিলেন, মাথার চুলগুলো আরও বড় ছিল, যখন দীর্ঘসময় শ্বাস রাখতে পারতেন সে সময়কার কথা।
একদিন করুণ সুর বা রোমান্টিক সুর তুললেন বাঁশিতে। সেই বাঁশির সুরে লাইব্রেরি থেকে নেমে আসলো এক পরী। পরে জানা গেল সে বাংলা বিভাগের ছাত্রী ছিল। গফুর ভাইয়ের বাঁশির সুর সহ গফুর ভাইয়েরই প্রেমে পড়ে গিয়েছিল সেই পরী। অত:পর গফুর ভাই আর্থিক সাহায্যসহ বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে পরীটির পড়াশুনা শেষ হতে সাহায্য করেন। অবশেষে মেয়েটি যখন পড়াশুনা শেষ করলো তখন কোন এক ব্যাংকে চাকুরী নিয়ে গফুর ভাইকে ভুলে গেল। কারণ গফুর ভাইয়ের ব্যাংকে তো জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত আর বাঁশি ছাড়া আর কিছু জমা ছিল না। তাই পরীটি অন্য কাউকে বিয়ে করে সংসার বাঁধলো। গফুর ভাইও অনেক যত্নে সংসার সাজালেন। সে সংসারে তার সঙ্গী হচ্ছে দুঃখ-কষ্ট। এখন পর্যন্ত অসংখ্য বন্ধু তাকে ছেড়ে গেলেও দুঃখ তাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছে। এজন্য তার কাছ থেকে মুক্তি নেই!
সত্য ঘটনাটা কেমন ছিল আসলে জানি না, কারণ দেখি নাই। গফুর ভাই এমন একটি প্রেমকাহিনীই বলেছেন।
আমাদের অনেক বন্ধু গফুর ভাইকে ‘গফুর চাচা’ বলে প্রচার চালাচ্ছেন দেখছি। গফুর ভাই এভাবে নিজেকে পছন্দ করেন না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ বছরের বেশি সময় ধরে থাকলেও তিনি ‘গফুর ভাই’ হিসেবে নিজেকে দেখতে চান। না ‘গফুর চাচা’ বা ‘গফুর মামা’। আর পাইকারী হারে ‘মামা’ বা ‘চাচা’ ডাকার ফলে ‘মামা’ বা ‘চাচা’ তার কদর হারিয়েছে। এটাকে অনেকেই অপমানজনক মনে করেন। মলচত্তরে একদিন দেখলাম একজন ২৫/২৬ বছর বয়সী কর্মচারীকে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ‘মামা’ সম্বোধন করায় সে বলে উঠেছিল, ‘আমাকে কি দেখতে মামা দেখায়?’
এটা স্পষ্টত সবাই পাইকারী হারে এই মামা সম্বোধন শুনতে পছন্দ করেন না। আমি মনে করি সবাইকে ভাই বলে সম্বোধন করলে দূরত্ব অনেক কমে মানুষের মধ্যে। গফুর ভাইকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনাকে নিয়ে যদি কোথাও লিখি তাহলে কি নামে লেখবো।
তিনি বলেছিলেন, ‘লেখবেন-বংশীবাদক গফুর ভাই’। তাই আমি মনে করি গফুর ভাই নামে ডাকাকেই সবচেয়ে উপযুক্ত মনে হয়।
গত বছর রোজার সময় গফুর ভাইয়ের একটা সাক্ষাতকার নিয়েছিলাম। সেটা একটা অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশও হয়েছিল। আলাপচারিতাটি এখানে তুলে ধরলাম আবার:
“সেদিন ইফতারের পর ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। তখন মানুষের সমাগম ছিল একটু কম। এত মানুষ ক্যাম্পাসে কিন্তু তখনো পরিচিত কাউকে দেখছিনা। লাইব্রেরির সামনে আসার পর দেখি পেছন থেকে নাম ধরে ডাকছেন কেউ। পেছন ফিরে দেখি আমাদের চিরপরিচিত গফুর ভাই।
গফুর ভাই খুব ক্ষেপে আছেন। আমি কেন এত দ্রুত হাঁটি, একদিনও ওনাকে আগে দেখিনা এই নিয়ে বিস্তর অভিযোগের গাট্টি খুললো। আমিও ভালো মানুষের ভান করে উনার অভিযোগগুলো বলার সুযোগ করে দিলাম। দীর্ঘ একবছর ধরে উনাকে ঘুরাচ্ছি যে পত্রিকায় উনাকে নিয়ে একটা লেখা লিখে দেবো। কিন্তু এখনো এটা করা হয়ে উঠেনি।
তাই কোন ধরণের প্রস্তুতি ছাড়াই কালকে উনার সাথে বসে পড়লাম উনার সাক্ষাতকার নেয়ার জন্য। কিছু প্রশ্ন অনেক আগে মাথায় ছিল আর বেশিরভাগ প্রশ্নই তৎক্ষণাৎ করা।
নিচে গফুর ভাইয়ের সাথে আলাপচারিতার কিছু খন্ড চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো:
গফুর ভাইকে কি নামে ডাকবো বা পত্রিকায় কি নামে দেয়া যায় সে প্রশ্ন করলে গফুর ভাই জানায় তাকে ‘বংশীবাদক গফুর ভাই’ নামে ডাকার জন্য। তার কথাই সই।
কোথায় জন্ম আপনার?
গফুর: রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি থানার গোবিন্দপুর গ্রাম। পোস্ট অফিস রামদিয়া বাজার।
একেবারে সাধারণ প্রশ্ন ‘আপনার বয়স কত?’
আর কে নারায়নের নাম্বির গল্পকারের মত সঠিক বিত্তান্ত জানা নেই। জানবেই কেমন করে। এদেশের লেখাপড়া জানা অনেক শিক্ষিত জনেরই জন্মের ঠিক নেই(!) মানে জন্ম তারিখের ঠিক নেই সেখানে গফুর ভাইয়ের এটা নিয়ে জানার কোন সম্ভাবনাই নেই।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়স কত ছিল এই সুতো ধরে এগুনোর চেষ্টা করলাম। তখন তার বয়স কত ছিল? গফুর ভাই জানান তার বয়স ছিল তখন ১০ কি ১২। সেই সূত্রে গফুর ভাইয়ের বর্তমান বয়স ৫০/৫২ বা ৫৪ হবে।
বিয়ে করেছেন কবে?
গফুর: ২২/২৩ বছর বয়সে।
একটা জিনিস লক্ষ্যণীয়, গফুর ভাইয়ের কাছে কোন প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই। সব আনুমানিক উত্তর।
ক্যাম্পাসে কবে এসেছেন এর জবাবে জানান প্রথম এসেছেন মুক্তিযদ্ধের ৭/৮ বছর পর। আবার আরেকবার বলেন ২৫/৩০ বছর বয়সে। তবে গত ১০/১৫ বছর ধরে একটানা ক্যাম্পাসে আছেন এটা নিশ্চিত করে বলতে পেরেছেন।
এখন রমজান মাস চলছে। তাই রোজা থাকেন কিভাবে এটা জিজ্ঞেস করলাম। তিনি কোন ধরণের কষ্ট বা ভনিতা না এনে সাধারণভাবে বলতে থাকেন যে এক বোতল পানি, দুটো বিস্কুট বা কাঁচা চাল খেয়ে সেহরি করেন। কাঁচা চাল না খেয়ে কেন সিদ্ধ করে ভাতের মারের সাথে খান না এটা জিজ্ঞেস করলে জানান যেখানে থাকেন সেখানে চুলার ব্যবস্থা নেই বা যাদের অনুগ্রহে থাকেন তারা সে ব্যবস্থা রাখেনি। তার মতই কোন পথের মানুষের সাথে হয়তো রাত কাটান গফুর ভাই। রাতে কেবল ঘাট্টি-বুচকা পাশে রেখে ঘুমাতে পারেন থাকার ব্যবস্থা বলতে এতটুকুই।
ইফতারের সময় অবশ্য গফুর ভাইকে পাওয়া যায়না। গতবছর অনেকবার চেষ্টা করেও আমার সাথে ইফতার করাতে পারি নাই। কারণ ক্যাম্পাসে অনেক বড় বড় ইফতার পার্টি থাকে। ইফতার হয়ে যায় বেশ ভালোই।
তবে বাকি এগারো মাস গফুর ভাইকে অনেক রাত রোজা থাকতে হয়। দিনের বেলা বিভিন্ন জনের সাথে চা নাস্তা বা ডাকসুতে খেয়ে ফেলতে পারলেও রাতে সেটা সাধারণত হয়না। এটা দেখলেই বুঝা যায়। অনেক সময় ক্ষুধা পেটে বা ক্ষুধা মুখে আশে পাশে আসেন। বেশিরভাগ সময়ই ওনার খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারিনা। হয়তোবা একটা চপ বা পুরি এবং এক কাপ চা খাইয়ে বিদেয় জানাই।
গফুর ভাইয়ের সাথে আমাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক! সেই চারবছর ধরে আমরা ‘কবিতার খাতা’ নামে একটি মাইক্রোম্যাগ বের করে আসছি। আমরা ৫/৬টি সংখ্যা মাত্র বের করতে পেরেছি। প্রত্যেকবারই উনার কাছে ২০/৩০ টি করে কপি দেওয়া হতো এবং খুব কড়া করে বলে দেয়া হতো ‘অর্ধেক টাকা কিন্তু আমাদেরকে দিবেন’। উনি হয়তো সব বিক্রি করতেন কিন্তু টাকা দিতেননা। উনি যে দিতে পারবেন না বা দিবেন না এটা মাথায় রেখেই উনার কাছে আমাদের বিভিন্ন প্রকাশনা দেয়া হতো। তারপরও দেখা হলে কৃত্রিম রাগ দেখাতে ছাড়িনাই কখনো। তবে উনি বেশ ভালো বন্ধু। কখনো কাছ ছাড়েনা। আমি যদি উনাকে নাও দেখি উনি দেখলে ঠিকই ডাক দিবেন, কাছে নিয়ে বসিয়ে সুখ দু:খের আলাপ করতে চাইবেন। সেক্ষেত্রে আমার হাতে সবসময় সময় থাকেনা। তবে যখনই উনার সাথে বসি, উনার বাঁশি শুনি, নিজের বানানো গান শুনি ততক্ষণ বেশ ভালোই লাগে।
একবার হয়েছি কি আমাদের ‘কবিতার খাতা’য় উনার একটা কবিতা ছাপা হয়েছে। তো আমার কাছে কবিতাটি ভালো লাগে নাই। কবিতার সমালোচনা করলাম। এতে গফুর ভাই বেশ চটে যায় এবং নিজের বিশাল কবিসত্তার ছাফাই গাওয়ার চেষ্টা করে এবং বলতে থাকে তিনি অনেক বড় কবি ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক আর উত্তরাধুনিক কাব্যজ্ঞান নিয়ে উনার সাথে লড়াই করার চেষ্টা করলামনা। যেখানে হৃদয়ের মামলা সেখানে কারখানার কামলা খাটেনা। উনি যদি নিজেকে অনেক বিশাল কবি মনে করে তাহলে আমার ক্ষতি কি? এ দেশে তো অনেকেই নিজেকে অনেক কিছু মনে করে। মনে করায় কোন ক্ষতি নাই।
গফুর ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম জীবনে কি পেয়েছেন? বড় দার্শনিক প্রশ্ন! তিনিও খুব দার্শনিকতার সাথে উত্তর দেন ‘জীবনে যা চেয়েছি তাই পেয়েছি’! বড় আজব উত্তর তো! পাল্টা প্রশ্ন করলাম, কেমনে? ‘এর পেছনে অনেক বেদনা আছে’, এতটুকু বলে থেমে যান। ‘কাকে পেয়েছেন’, এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম গফুর ভাইয়ের কোর্টে। গফুর ভাই এবার বর্ষার প্রমত্তা নদীর মতো দিল খুলে বলতে লাগলেন, ‘ঈশ্বরকে পেয়েছি। আমার মত সুখি কয়জন আছে? আমার হচ্ছে আল্লাহর চাকুরি। সারাদিন আল্লাহর জিকির করি। বাঁশি হচ্ছে মাধ্যম। চাকুরি করি শুধু আল্লাহর। আল্লাহকে ডাকলে পেটে ক্ষুধা থাকেনা।’
গফুর ভাইয়ের মত এমন ‘অশিক্ষিত’, ‘মূর্খ’, ‘গেয়ো’ মানুষ থেকে এমন ভারি কথা শুনে খানিকটা বিস্মিত হয়েছি। এই বিস্ময়টা কাটানোর জন্য পাল্টা প্রশ্নে চলে যাই। বললাম ‘জীবনে কি চান?’ এর জবাবে বলেন, ‘আমার চাওয়া পাওয়ার স্বাদ মিটে গেছে। আমার জীবনে কোন চাওয়া নেই।’ জীবনে চাওয়া আছে অনেক এমন লোকের কাছে এমন জবাব ধাক্কা খাওয়ার মতই। ধাক্কা-ই খেলাম!
জীবনে কোন কষ্ট আছে?
গফুর: জীবনে কোন কষ্ট নেই। যা চাওয়ার যা পাওয়ার সবই পেয়ে গেছি।
এই প্রশ্নটা আসলে অতিরিক্ত প্রশ্ন। যার জীবনে কোন চাওয়া নেই তার তো কোন কষ্ট থাকতে পারে না। তারপরও নিজের ব্যক্তিগত সংকট থেকে এই প্রশ্নটি করা এই আর কি!
একেবারে সহজ জিজ্ঞাসা, জীবনের লক্ষ্য কি গফুর ভাই?
গফুর: মানুষের সেবা। লাখো কোটি মানুষের সেবা।
কেমনে সে সেবা দিবেন সেটা উনিও বলেননি আবার আমার কাছেও পরিস্কার নয়। যেটা বলছেন বলছেনই।
জীবনে কি দেখেছেন
গফুর: অনেক কিছু।
ভালো লেগেছে কোনটা?
গফুর: আল্লাহর নাম ছাড়া কোন কিছুই ভালো না।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু বলতে চান কিনা?
গফুর: আর কিছুই কইতে চাইনা। মানুষ ছাড়া আল্লাহর কোন দলিল নাই। সেই মানুষটা হতে হবে।”
এই মানুষ, এই গফুর ভাই আজ ক্যাম্পাসে নেই। ক্যাম্পাসে তাকে সুস্থ করে আনতে হলে নাকি টাকা লাগবে, সেটা কতটুকু বেশি?
মানুষের চেয়ে বেশি?
মানুষের ভালোবাসার চেয়েও বেশি?
(আমার ক্ষমতা হচ্ছে এই মধ্যরাতে ২/৩ ঘন্টা ধরে এই লেখাটি শেষ করা। আপনার কতটুকু ক্ষমতা? পুরোটা দেই না, বন্ধু! আমাদের বন্ধু, ভাই বংশীবাদক গফুর ভাইকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনি না চলেন-)
সাবিদিন ইব্রাহিম
২৪ মে, ২০১৫
১৭৬ ফকিরের পুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০
মেইল: sdibrahim385@gmail.com